আজ ৩১ জুলাই ছিটমহল বিনিময়ের ৫বছর পূর্তি
মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ, ভিতরকুটি বাঁশপঁচাই বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে ফিরে:
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই গভীর রাতে বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ১শত ৬২টি ছিটমহল বিনিময় হয়েছিল। এর মধ্যে ভারতের ভূখণ্ডে ছিল বাংলাদেশের ৫১টি ও বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ছিল ভারতের ১শত ১১টি ছিটমহল। বাংলাদেশের বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হলেও হতাশা আছে ভারতের বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলায় পাঁচ বছরের মাথায় বিলুপ্ত ছিটমহলের চিত্র পাল্টে গেছে। এক সময়ের বঞ্চিত জনপদে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। ঘরে ঘরে এসেছে বিদ্যুৎ। বিলুপ্ত ছিটবাসী পাচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা। জমির কাগজপত্র হয়েছে তাঁদের। ডিজিটাল তথ্যসেবা কেন্দ্রের সেবাও পৌঁছে গেছে তাঁদের দোরগোড়ায়। বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের মনে তাই সুখের আমেজ।
আজ ৩১ জুলাই তাঁরা ছিটমহল বিনিময়ের তথা তাঁদের ‘স্বাধীনতার’ পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন করবেন হাসি-আনন্দে।
বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে ১শত ১১টি ছিটমহলের ১২টি পড়েছে কুড়িগ্রামে, লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি এবং নীলফামারীতে পড়েছে ৪টি ছিটমহল। বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়া।
লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ভিতরকুঠি বাঁশপচাই গ্রামটি আর আগের মতো নেই। গ্রামে এসেছে বহুল প্রত্যাশিত বিদ্যুৎ, নির্মাণ হয়েছে সাতটি কালভার্ট, দুই কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পাকা হয়েছে। গ্রামে উঠেছে ভিতরকুঠি সালেহা সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, নির্মাণ হয়েছে একটি সুদৃশ্য শহীদ মিনার। গ্রামের বয়স্ক, বিধবা ভাতা পেয়েছেন অনেকেই।
কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় হতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভিতরকুঠি বাঁশপচাই গ্রামে রেশন কার্ড, বয়স্ক ভাতা কার্ড, বিধবা ভাতা কার্ড, প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড দিয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা পরিষদ থেকে বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য গোড়াপাকা নলকূপ, প্রশিক্ষিত দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য জেলা পরিষদ থেকে সেলাই মেশিন বিনা মূল্যে দিয়েছে।
লালমনিরহাট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভিতরকুঠি বাঁশপচাই গ্রামে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে। এ ট্রান্সফরমারের আওতায় গ্রামের পরিবারগুলোকে আবাসিক বিদ্যুতের সংযোগ দিয়েছে।